বনভোজন স্থগিত করে বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য তহবিল প্রদান:

নিউইয়র্কের প্রাচীন সংগঠন,বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্রঙ্কস নিউইয়র্ক, ইনক, প্রতিবছর সংগঠনটি বনভোজনের আয়োজন করে, যা কর্মীদের জন্য আনন্দ-উল্লাস এবং সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় করার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। এ বছরেও তারিক নির্ধারিত ছিল ১ সেপ্টেম্বর ,তবে সময়ের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী দায়িত্ব এবং নৈতিকতা বিভিন্নভাবে প্রতিফলিত হতে পারে। চলমান পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমন অবস্থায় সম্প্রদায়, সংস্থা, বা প্রতিষ্ঠান এই কঠিন সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য। তাই, এই বছরের বনভোজন স্থগিত করে, সেই তহবিল বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত ২৫ আগস্ট নিউ ইয়র্ক ব্রঙ্কস নীরব রেস্টুরেন্টে এক জরুরী আলোচনা সভার আহ্বান করা হয়,আলোচনা সভায় সোসাইটির সভাপতি সামাদ মিয়া জাকারিয়ার সভাপত্বিতে এবং সাধারণ সম্পাদক ইমরান আলী টিপুর পরিচালনায় জরুরী আলোচনা সভার উপস্তিত ছিলেন সংগঠনের সহ সভাপতি প্রফেসর আমিনুল হক চুন্নু, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মুহিত, আইন ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কাজীরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক-মছনুর রহমান, ধর্ম ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আবু সাঈদ,আপ্যায়ন সম্পাদক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেইন, সাদস্যিক সম্পাদক রুবেজ সিদ্দিকী,কার্যকরী সদস্য মোঃ আবিদ হোসেন মোল্লা, প্রস্তাবিত: আলোচনা বাংলাদেশ একটি বন্যাপ্রবণ দেশ, যেখানে প্রতি বছর বর্ষাকালে বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা দেখা দেয়। তবে, এই বছর পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নদ-নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে, এবং অনেক গ্রাম, শহর, এবং ক্ষেতখামার পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এমনকি কিছু এলাকায় পানি বাড়ছে এবং জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। যেসব পরিবার আশ্রয়হীন হয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেই খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং অন্যান্য জরুরি জিনিসপত্রের তীব্র সংকটে পড়েছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু, বৃদ্ধ, এবং অসুস্থ ব্যক্তিরা, যারা সাহায্যের অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে মানবতার সেবায় আমাদের এগিয়ে আসা উচিত।প্রতিবছর আমাদের বনভোজনের জন্য যে বাজেট নির্ধারণ করা হয়, তা সাধারণত সংস্থার সকল কর্মী এবং তাদের পরিবারের আনন্দ উপভোগের জন্য ব্যয় করা হয়। এই বাজেটে অন্তর্ভুক্ত থাকে স্থান ভাড়া, খাবার, পরিবহন, বিনোদনের ব্যবস্থা, এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ। এবছরও প্রায় একই ধরনের বাজেট রাখা হয়েছিল, যা বন্যাকবলিত মানুষের সাহায্যের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় হতে পারে। **সিদ্ধান্তের পটভূমি:** ১. **মানবিক ও সামাজিক দায়িত্ব:** বর্তমান বন্যার প্রেক্ষিতে আমরা মানবতার প্রতি দায়িত্ব এবং সহানুভূতির অনুশীলন করতে চাই। এই কঠিন সময়ে, আমাদের আনন্দ-উল্লাসের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, যাদের জীবন হুমকির মুখে রয়েছে, তাদের পাশে দাঁড়ানো। ২. **সংস্থার নৈতিকতা:** আমাদের সংস্থার মূলনীতি হলো, আমরা শুধু ব্যবসায়িক কার্যক্রমেই নয়, বরং সামাজিক দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রেও সবার আগে থাকি। এই নীতি অনুসারে, আমরা সমাজের উন্নয়ন এবং প্রয়োজনীয়তার সময়ে সমাজের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ৩. **অংশগ্রহণকারীদের সম্মতি:** বনভোজনে অংশগ্রহণের জন্য নির্ধারিত ব্যক্তিদের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সবাই এই মানবিক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং প্রস্তাবিত সিদ্ধান্তে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন। **সাহায্য কার্যক্রম পরিকল্পনা:** এই তহবিলটি সরাসরি বন্যাকবলিত এলাকায় পাঠানো হবে, যেখানে স্থানীয় এনজিও এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে। এছাড়া, এই তহবিলের একটি অংশ চিকিৎসা সহায়তা এবং জন্যও ব্যয় করা হবে। আমাদের কর্মীরা স্বেচ্ছায় এই উদ্যোগে অংশগ্রহণ করবেন এবং ত্রাণ কার্যক্রমে সরাসরি যুক্ত থাকবেন।আমাদের বনভোজনের পরিকল্পনা স্থগিত করে সেই তহবিল বন্যার্তদের জন্য ব্যয় করা মানবিকতার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। এর মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করতে পারবো যে, আমরা শুধু নিজেদের জন্য নয়, বরং সমাজের জন্যও কাজ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই সংকটময় সময়ে আমাদের সহানুভূতি এবং সাহায্যপ্রাপ্তি বন্যার্ত।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ